Showing posts with label মনকুঁড়ি. Show all posts
Showing posts with label মনকুঁড়ি. Show all posts

Oct 6, 2018

তিষ্ঠ, ক্ষণকাল

আকাশের প্রতিটি নক্ষত্রের মৃত্যু হবে
আমি দেখে যেতে পারব না।
আরো নক্ষত্রের জন্ম হবে
হয়ত কেউই ধরা দেবে না।
এ জড় বিশালত্বের মাঝে
যেটুকু সময় আমি থাকব
সেটুকুই নাকি জীবন।
অস্থির পৃথিবীর
এই ক্ষুদ্রতার মাঝে
বেজে চলে ভাঙা গড়ার
কত শত নীরব কাহন।
স্থানু হোক মন, চঞ্চল হোক জীবন।
হয়ত নক্ষত্রের মত উজ্জ্বল নয়,
কিন্তু ক্রমশ ম্রিয়মান তরঙ্গের মত
উচ্ছ্বলই হল নাহয়।

Sep 9, 2016

শুষ্কপুষ্পপত্রপুট - ২

"হাজার খামের চিঠি আসে 
হাজার পাতার পরতে 
পুষ্পপত্রের সাধ বাকি রয় 
জেগে থাকে মনেতে। 


হাজার প্রহর হাজার পলক 
হাজার কাহন কল্পনা 
একলা আমার হাজার পটে 

আঁকা তোমার আল্পনা" 
গাছের ফুলের নাম ভুলেছি।
রঙের ফুলে চোখ মেলেছি চুপচাপ।
তাই ঢঙের দেশের শাখায় শাখায় ঝাপ দিয়ে ফুলের খোঁজে বেড়িয়েছি।

রঙধনুর নাম আসমানি ফুল।
শাপলা পাতায় পাতার চাউনি আমার পাতার ফুল।
না দিতে পারে ডুব, না পারে উড়ে ছেড়ে চলে যেতে।
সব রঙের ফুল নেই। কিন্তু খুঁজতে গিয়ে আমি ফুলে কোনো রঙকে বাদ রাখিনি।
সবচেয়েয়েয়ে কমবয়সী ফুলের নাম ঝরা ফুল।
ঝরতে ঝরতে ভুলে যায় তার একটা আবাস ছিল।
তার নাম হয় রাস্তার ফুল।
আমি তাদের দুই একজনকে কুঁড়িয়ে আনি।
কারণ সে ফুলের দাবিদার নাই।
না সে ফুল কোনো কবিতার, না কোনো পুষ্পিতার।

পুষ্পিতার কথা মনে পড়ে গেল।
তার খোঁপার ফুল হতে পারত আমার ফুল।
কিন্তু আমার ফুলের নাম তো ঝরা ফুল!
ফুল গেল ঝরে, খোপা গেল খসে।
খোপার ফুলের বাস আছে জানো?
ঐ যে খসে গেল পরে সবচেয়ে ভাল বুঝলাম।
খসে গিয়ে পাপড়ি মেলে রইল।

আমি এক মাটির ঘরে ঘুম দেয়ার স্বপ্ন দেখলাম।
মাটির ঘরে আঁকাবাঁকা চিড়।
আমি বললাম চিড়ল ফুল!
ঘরের বাহির বাঁশের পাতার আওয়াজ।
হাওয়ায় যদি একটু করেও ভুলে বলে ওঠে: 'হুর'
ওমনি বাঁশের পাতারা 'হুর'কে করে ফেলে কড়মড়ঝরমড়কড়ঝর!
আমি বলে আসলাম এজন্য তোদের ফুল হয় না।
এত কথা বললে ফুল হবে নাকি?

ফুল হবে চিঠির মত!
কথা থাকবে কিন্তু আওয়াজ হবে না।
আওয়াজ হবে ভিতরে ভিতরে।
যার যার মন, তার তার কাহন,
তার তার স্বপন, একলার বুনন।
এর নাম পুষ্পপত্র!

পুষ্পপত্র জোট হয়ে জন্মে দলে দলে ঝরে।
ঝরার খবর ছড়ায় না।
চিঠির খবর কী সবাই পায়? পায় না।
Everyone has sight but not everyone can see everything.

চলতে পথে পাথরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি কেন ফুল ফোটাও না?
কত বড় বড় পাথরে আজ ফুলচন্দন!
পাথর আমায় উত্তর দিল না।
কারণ আমি পাথরের পুষ্পপত্রের প্রাপক নই।

আমার চোখে ফোটে ফুল। সর্ষের।
মেঘে ফোটে ফুল। অন্ধকারের।
নখে ফোটে ফুল। দুঃখের, লোকে বলে।
আমি লোকের কথায় কান দিয়েছি। মন দিইনি।
তাই আমার যত্রতত্র সর্বত্র পুষ্পপত্র।

নিয়মের মাঝে অনিয়মের নিয়তি।
চোখের পাতা আছে, পাপড়ি আছে, ফোটার সৌন্দর্য আছে। এরপরো চোখ ফুল নয়।
তাই চোখের নিজের কোনো রঙিন গল্প নেই।

রঙিন গল্পগুলো চোখ পাতা ফেলে ফেলে দেখে চলে ...
এর নাম পলক। কোনো কোনো পলক খুব রঙ বদলে দেয়।
কারণ পলকে দুনিয়া বদলে যায়।
হয়ত সবার না।
কিন্তু অনেকের অনেক বড় দুনিয়া।
এত এত রঙের গল্প দেখে চোখের রঙ তাই সাদাকালো।
তাই যত আল্পনাই কল্পনার অতীত বদলে দিক চোখের সাদা কালোর চেয়ে বড় তফাৎ গড়ে দিতে পারে না।
সব পুরনো!
এরা ঠাঁই নেয় গিয়ে মনে।

মনের পাপড়ি নেই, পাতা নেই, দেখতে পাওয়ার চাউনিও নেই।
তবুও মন নাকি ফুলের মত!!
মনের কথা মনে ছড়ায়।
হাওয়ায় হাসে না।
তাই মন আরেক পুষ্পপত্র।
কোনোটা শুষ্ক কোনোটা সিক্ত। কিন্তু একটাও রুক্ষ নয়।


"পৃথিবীর যত পুরনো রঙিন গল্পেরা
ভীড় করে যদি তোমার মনের উঠোনে।
জানি সে হাজার গল্পের মাঝে তুমি ঠিকই
চিনে নেবে একটা গল্প সযতনে ..." 

শুষ্কপুষ্পপত্রপুট

''চিলেকোঠায় বসা বাদামী বেড়াল বোনে শুন্যে মায়াজাল 
ছাইরঙা পেঁচা সেই চোখ টিপে বসে আছে কত না বছরকাল'' 

একদা এক গাদা গোলাপ এসেছিল। 
সে গোলাপের রঙ ছিল! 
জল ছিল! 
রূপ ছিল! 
ঘ্রাণ ছিল! 
কাঁটায় ছিল তারুণ্য!
আর ছিল সুন্দর একটা ভবিষ্যত!

গোলাপের আব্রু ছিল লাজে।
লাজ ভাঙিল কাষ্ঠফাটা তেজে।
লাল পুষ্প কালো হল, মেলে থেকে বাঁধন খোয়াল!
পত্রপুটের। কাঁটা হয়ে গেল আদরের!
কাগজের ফুলের চেয়ে আমি পেলাম ফুলেল কাগজ!
রক্তিমতা হল ইতিহাস, কৃষ্ণগোলাপ! কিন্তু শুষ্ক!

হলুদ গাদার গুচ্ছবাদা জ্বলিয়া গেল!
শুকিয়ে! পিঁপড়ায় খেলো! পোকায় বাসা করিল!
পদতলে দলিত হইল!

বাবরি চুলো কদমের কেশরেরা বাদামি হতে হতে ন্যাড়া কদমের দেখা দিল!

বৈঁচি ফুলের রেণুরা মাটির ওপর নিজের বিছানা সাজাইল! সেখানে বৈঁচির বীজেরা আসন গাড়িবে!

কাশফুলেরা শরতের হাওয়ায় উড়তে গিয়ে উড়ে গেছে অনেক দূর! এরাই কেবল ঝরে যায় না, শুধু উড়ে যায়। উড়তে গিয়ে হারিয়ে যায়। সব উড়নই পাখির কিচিরমিচিরের মত নয়!

বকুল! শুকিয়ে মায়া বাড়াচ্ছে ড্রয়ারের কোণে!
বকুলের মালা মহাকালের জন্য।
মহাকাল অন্য জিনিস। অন্যরকম।
আমার শাপলার মালা সকালে গড়ে বিকেলে মরে যায়!
নিঝুম রাত শেষে ফুটতে যায় আলোয়।
আলো আসে।
ভোর হয়। কিন্তু,
দম আসে না!

আমলকীর ফুল দেখেছো? সবুজাভ সাদা? কৃপণ কায়া?
জংলী ফুল? গন্ধ ছাড়া গাঢ় রঙিন?
হাস্নাহেনার বাস পাও?
স্মৃতি থেকে? হাওয়া থেকে না - হাওয়ারা পচে গেছে- বখে গেছে।
তার চেয়ে রক্তজবার রঙটা কেমন?
ঝুমকো জবার টিকলি?
চলবে?
কামিনীর নাকফুল?
আমের মুকুলের তোড়া?
ধনেপাতার মিহি সাদা কিপ্টে ফুল?

রজনীগন্ধারা ভাল না! এরা বড়ই বাজারে!

ডালিয়ার শত পাপড়ি?
সত্যিকারের কাগজ ফুল? আধো বেগুনী আধো গোলাপী?
কাদাজলের গোলাপপ্রতীম পদ্ম?

তাও যদি না হয় তো নাও কাঁটায় ফোটা লজ্জাবতী!
এটাতো মানাবে অন্তত?
লজ্জাবতীরা পাতায় লাজুক!
ফুল শুকোলেও পাতারা আছে না? :)

ফুলেরা চলে যাবার! ফুলের ফোটা অনবদ্য কি?
বলব না।
এর চেয়ে ফল ফলার স্বপ্ন দেখে আসুক অনাগত সময়!

নতুন বছর মানেই নতুন সব নয়, পুরনোকে নতুন চোখে দেখবার।
সময় গড়িয়ে যাবে, পৃথিবী ঘুরুক। যদি কোনোদিন দারুণ সূর্যোদয় ঘটে তো ঘটল! জোছনার যদি কভু মায়া হয় তো হল!
এরপর ফুলের দাম ...
গন্তব্যে ...

'' আকাশে ছড়ানো মেঘের কাছাকাছি
দেখা যায় তোমাদের বাড়ি ...
সেই বাড়ির নেই ঠিকানা
শুধু অজানা লাল সুড়কির পথ
শূন্যে দেয় পাড়ি ...'' 

#2015 এর জন্য ফুলের ভালবাসা।