হবিগঞ্জের জমিন ধরে ছুটি, বায়ে ঝরে পড়ে ঘোলাটে বিকেল...
পড়ন্ত সে কোমল বিকেলের সামনে সমানে ধুলিধূসরিত আঘুণী ধানখেত
মেঘ নাই, আকাশের নীল নাই, শুধু মাঠে কাটা ধানের শুকনো গোছার সমুদ্র
আহারে শূন্যতা! কী বিশালত্ব তার! কী চাউনি!
সে শুকনো মাঠে, কতগুলো ছেলের ক্রিকেটে মাতে শৈশব, নারকেলের ডাগ্যায় চলে ব্যাটিং
দিগন্ত জোড়া বিস্তর প্রান্তর মেলা বয়েসী উল্লাসে খেলে খালি পায়ের হাফপ্যান্ট কমান্ডোর দল
সে ছোট খেলুড়ের দল না জানি গড়া ক্রোশব্যাপী কত প্রতিবেশী গুনে
আমি জানি, এ শৈশবেরাও যাবে জাদুঘরে, শিগগির, কারণ বাকি পৃথিবীর শিশুরা কড়া যুবক হবে বলে তখনো হয়ত পড়ছে কষে কাগজে কলম-পেন্সিল চষে।
মনে পড়ে প্রমথ চৌধুরীর একখানি চরণ— শৈশবে যে শিশু ছিল না, যৌবনে সে যুবক হতে পারে না।
তবু অসম্ভবের সাধনা চলে সাধন করার চেষ্টায়, রূপকথার দেশে— শিক্ষায়।
ঘাস নাই, গরু নাই, রাখাল নাই, নাই চাষাদের আনাগোনাও
ভীষণ ঘূর্ণাবর্তী পৃথিবীর বুকেও কত এমন থমকে থাকা বিশ্রান্ত দুনিয়ার জানালা খোলা
আইল মেলে দিয়ে ন্যাড়া ধানখেত টুকরো টুকরো, কিছু নেই বাড়তি! তবু কিছু চাই না!
এর মাঝে প্রায়ই দীঘল পথ বয়ে গেছে যত দূর গিয়ে দিগন্ত ছাপায়
দুধারে মরাঘাসের সে দীঘল পথের সরু শাদা দাগ কেটে কোনো বাবার সাংহাই-চায়না সাইকেল ছুটে চলে গোধুলীর দিকে...
ফুলহাতা মলিন শার্ট গতরে, লুঙ্গি হাওয়ায় ফুলে এবড়ো খেবড়ো মাটির হেলকি দুলকি চলুনি—
আহা রে চাষার অবলা দিনগুলি! কত সহজ সাবলীলে অমনি চলে অস্তাচলে।
আহা রে আমার ধানখেতের মেঠোপথ! তুই কেন আরো ধানখেত গড়ালি না?
সেদিন কি হাট-বার? না মনে হয়। কাঁধে পাত্তি-ঝোলানো হাটুরে তো কেউ দেখা দিল না!
কখনো সখনো নেশা ভাঙে দৃষ্টির— মাঠ ধরে গেঁথে গেঁথে টানা তারের খাম্বা। দূরে যায়, কাছে আসে। ফাঁকে ফাঁকে ধরা দিয়ে যায় থোকা থোকা বাড়ি-দ্বীপ।
সাতখান-ছয়খান আইলের বিরতিতে একখান করে পাড়া— সযতনে আঙিনাগুলো আড়াল করে ঘিরে আছে ভিনদেশী ইউক্যালিপটাস,
তালগাছ নেই, বটগাছ নেই এদেশে আর। বাবুই পাখির বাসাও বোধয় চড়ুই পাখির কবিতায়...
কখন হঠাৎ খেয়াল হয় উঁচু উঁচু গাছগুলো ডাল ছুটিয়ে সচকিতে হয়ে গেছে চুঙ্গা চুঙ্গা ইটের ভাটা...
এ নিশ্চিন্ত বিকেল দেখার জন্য কোনো পাখির দলও নাই
বিজন মাঠের পর মাঠ... বিবর্ণ আকাশের তলে হঠাৎ বিরলে
ধর্মজাল খাড়ায়ে ঝুলে নির্জন, নিস্তরঙ্গ খালের পাড়ে, কানাবগীরও ছুটি!
এই দর্শকহীন কোলহলবিহীন নীরব পসরায়, যুগ হারানো খোয়া যাওয়া স্মৃতি, নিভৃত, নির্বিকার পল্লীর
এত আয়োজন!
সবই বৃথা
যদি
আমি না থাকি।
অগ্রহায়ণের শেষ, পৌষের পয়লা দিনে করা খসড়া থেকে। ১৪২৬ বঙ্গাব্দ, ঢাকা থেকে সিলেটে আসার সময়। অবসরগুলো কেউ দিয়ে যাও অযতনে, সযতনে লব থুবায়ে মনমতন। কিছু কিছু শব্দ গ্রামীণ এবং লোকায়ত। এই আঘুণ মাস এলে মার কথা খুব মনে পড়ে। কখনোবা আঘুণ মাসের ছলেও মাকে মনে পড়ে। আমি আঘুণ মাসের, আমার মা— আঘুণ মাসের মা।
Jan 30, 2020
Oct 6, 2018
তিষ্ঠ, ক্ষণকাল
আকাশের প্রতিটি নক্ষত্রের মৃত্যু হবে
আমি দেখে যেতে পারব না।
আরো নক্ষত্রের জন্ম হবে
হয়ত কেউই ধরা দেবে না।
এ জড় বিশালত্বের মাঝে
যেটুকু সময় আমি থাকব
সেটুকুই নাকি জীবন।
অস্থির পৃথিবীর
এই ক্ষুদ্রতার মাঝে
বেজে চলে ভাঙা গড়ার
কত শত নীরব কাহন।
স্থানু হোক মন, চঞ্চল হোক জীবন।
হয়ত নক্ষত্রের মত উজ্জ্বল নয়,
কিন্তু ক্রমশ ম্রিয়মান তরঙ্গের মত
উচ্ছ্বলই হল নাহয়।
Sep 13, 2018

দাম দিলাম: 2 of 5 stars
কেন্দ্রীনবিদ, মৌলকণাবিদ, দেশকাল, বিঘ্নন, ধ্রুপদী তত্ত্ব, মহাবিক্ষোভ, সমমিতি (symmetry), কমজোর (weak force), তড়িৎ কমজোর বল, মহামিলন তত্ত্ব (GUT), দ্বিশাখীভবন— এইরকম আরো একশটা শব্দ এই বইটাকে নষ্ট করেছে। বিজ্ঞান শব্দের ঝনঝনানি চায় না, বিজ্ঞান চায় সোজাসাপ্টা, স্পষ্ট ও প্রচলিত টার্মিনেশন।
বিজ্ঞানের দর্শন হল সরলতা, বিজ্ঞানকে দর্শনশাস্ত্রের পোষাক পড়িয়ে দিলেই সে সুদর্শন হয়ে উঠবে না। তার নিজস্ব গুণ ও চাহিদা রয়েছে। প্রতিশব্দে ভাষার ব্যবহার স্পষ্ট হয় কিন্তু আমি দেখেছি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একই ভাষায় প্রতিশব্দ ব্যবহারে বোঝার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে। একটা বিষয়কে একই ভাষার বিবিধ নামে ডাকলে বিজ্ঞানের খিঁচুনি শুরু হয়ে যাবে। তাই বিজ্ঞান পদের প্রতিশব্দের চাহিদা জানায় না। বরং ভাবের প্রতিরূপ বিজ্ঞানের চাহিদা। যেমন, Simile এবং Metaphor একই বিষয়ের উপর বহু তৈরি করা যেতে পারে। সেটা এক অর্থে ধারণাকে বিভিন্ন অনুরূপ, তুলনামূলক দৃষ্টির মাধ্যমে বুঝতে সাহায্য করবে। বিজ্ঞানে লেখালেখির ক্ষেত্রে প্রথম উদ্দেশ্য জানানো এবং জানানো বিষয়গুলো বুঝতে পারবে এমনভাবে উপস্থাপন করা। বুঝতে গিয়ে ভাষা ঝর্ণার মত শব্দ ঝারতে থাকলে বিজ্ঞান তলিয়ে যেতে পারে।
অনেক লেখকের মত হল বাংলায় বিজ্ঞানের প্রসারে বাংলা শব্দ ব্যবহার করা। কিন্তু শব্দচয়নের ক্ষেত্রে ঘটনা সংশ্লিষ্ট থাকে, যেহেতু আবিষ্কারের জগৎটা প্রায় বিদেশী তাই বিদেশী শব্দ যখন বিদেশী বিজ্ঞানের টার্ম হিসেবে ঢুকে তখন সেটি সংশ্লিষ্টতা ধরে রাখতে পারে। কিন্তু দেশীয় ভাষায় তখন রূপান্তর করতে গিয়ে উক্ত শব্দের সমার্থক শব্দ বের করতে হয়, বহু ক্ষেত্রে সমার্থক শব্দটি ভাষার সমার্থকতা বহন করে, ঘটনার সংশ্লিষ্টতা ধারণ করতে পারে না। এক্ষেত্রে আমার মত হল, বিজ্ঞানে ভাষার রূপান্তরের কুস্তী না করে বিজ্ঞানের কাজ বাড়ানো। বিজ্ঞানে দেশীয় সৃষ্টিই পারে সবচেয়ে যুৎসই দেশীয় শব্দ উপহার দিতে। জোরটা তাই শব্দে আসুক, কিন্তু আবিষ্কারের ঝোঁক থেকে।
'৯২ সালের বই বলে '৯২ দিয়ে বিচার করতে পারছি না। কারণ, আমি পাঠক তো '৯২ এর না। আর বিজ্ঞানের চিরায়ত ব্যাপারগুলোর ক্ষেত্রে তো আর '৯২ না '১৮ এমন কোনো ব্যাপার নেই। পড়তে পড়তে কল্পনায় আসছিল, বইটা উইকিপিডিয়ার পাতা হলে একই পাঠ ঝুরঝুরে করে দেয়া যেত। এই যে বইটার সমালোচনা করলাম এটা যতটা আশঙ্কার তার চেয়ে বেশি আশঙ্কার হল বিজ্ঞানের বিষয়ের প্রকাশিত সমসাময়িক বইগুলোও এইরকম কেবল বাংলা বাক্যের সমাহার।
আমাদের প্রকাশনীগুলো কি এখনো ছবির ব্যবস্থা করতে পারে না? লেখাসংক্রান্ত পুরো দায়িত্বই বুঝি লেখকের? প্রকাশনা কেবল বিক্রয়ের ব্যাপার দেখবে। আমাদের পাঠকরা কি সমীকরণবিমুখ? সমীকরণবিমুখ পাঠক যেমন আছে, গৎ-বিজ্ঞান বিমুখ পাঠকও আছে। কেন জানি, সমীকরণবিমুখতাই বাজারে চাউর হয়ে আছে। অথচ সমীকরণের বইগুলো যে পাঠক তৈরি করবে তারা তো গৎ লেখকের বাড়তি বাজার। গৎ তো চলবেই, কিন্তু এতে কি বেগ বাড়ে?
গুডরিডসে রিভিউ দেয়া অভ্যাস হয়ে গেছে। অন্যান্য রিভিউ দেখতে পারেন এখানে।
May 13, 2018

দাম দিলাম: 4 out of 5 stars
তোর জন্য আকাশ থেকে পেঁজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুণি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই!
গানটার কথা বইতে নেই। কিন্তু এক ভারী বিকেলে বই পড়তে পড়তে মনটা ভালো হয়ে গেছে। অবশ্য আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যাপার আছে, তবে বইয়ে মেঘের কথা আছে। পেঁজা মেঘের কথা আছে। হয়ত মন ভাল করার জন্য আর আর কিছু অনুরণণের বিষয়ও লুকিয়ে ছিল। কেউ যদি তার শৈশবে বা শৈশব মনের চরিত্রগুলোর সাথে পরিচিত না থাকে তবে প্রথম গল্প গোগোদা'র সঙ্গে উলুলু দেশে গল্পে সে নামগুলো পেয়ে যাবে। আমিই তো এক না-জানা লেখক পেয়ে গেছি। কমলকুমার মজুমদার ছিলেন কিনা লেখকদের লেখক সে আবার কাঠখোদাইও করত! তার খোদাই পানকৌড়ির কথা ভেবে আমিও রোমন্থন করেছি আমার কল্পনায় খোদাই করা কাঠমূর্তিগুলো কবে কবে হারিয়ে গেছে।
মন্ত্র দিয়ে তো আর কাজ হয় না, মন খোদাই তাই যথেষ্ঠ নয়।
বেলাল চৌধুরীর পড়া প্রথম বই। ভারী কোনো গল্প নয়, কিন্তু পড়ে অনেকগুলো দামী জিনিসের ইঙ্গিত পেয়েছি। সেগুলোই বের করে আনতে হবে। Christine Nostlinger এর The Cucumber King বই অবলম্বনে একটা ছবি হয়েছে। ছবিটির নাম এ বইয়ে নেই। আগেই বলেছি এটা তথ্য উপাত্ত পরিবেশনের বই নয়, কিন্তু তথ্য ছেঁকে নিয়ে রসদ বের করা যাবে ভাল ভাল। মুভিটা উদ্ধার করতে হবে ইতিহাস গলে। ছবির পরিচালক হার্ক বোম (Hark Bohm).
ওহ হ্যাঁ, "চিরকালীন গল্পের একটি" সারমর্মটা পড়ার হঠাৎ করে গল্পটি আমার কাছেও অনেক বিস্তৃত হয়ে গেল। হাসিটা দিলাম সারমর্ম পড়ে। না পড়লে খেয়াল করতাম না। অর্ধেক কমলালেবু সহজ গল্পে পুঁজিবাদের কথা বলে দিয়েছে এক ফাঁকে- সিস্টেম লোড!
আমার সকল বইয়ের রিভিউ দেখুন এখানে
[রিভিউ দিয়ে উলটে ফেলিনা, কিন্তু তাও এক একটা রিভিউ বীজের মত মনে হয়। যদি কেউ কখনো সে বীজের খোঁজ পেয়ে যায় তবে না বৃক্ষ হয়ে গেল! ফেলে রাখি, পানি পেলে না বৃক্ষসাধন হবে।]
Apr 28, 2018

My rating: 5 of 5 stars
একশ বছর কত দীর্ঘ, একশ বছরের অন্ধকার কত গভীর অন্ধকারে থাকি বলে হয়ত জানি না!
এত শক্ত বিদ্রুপাত্মক গ্রন্থনা নাড়িয়ে দেয়ার মত। '৯৫ এর বই এখনো তার প্রেক্ষাপট হারায়নি, এখনো সত্য এ ব্যাপারটা কত আচানক! হতে পারত এ একশ বছর বিগত একশ বছর। কিন্তু অবাক করে দিয়ে এ একশ বছর ভবিষ্যতের জন্য ছিল। একশ বছরের অন্ধকার আলো এনে দেবে সে কথাও বলে না। এরপর যা হবে তার জন্য 'অন্ধকার'-ও হয়ত যথেষ্ঠ নয়।
বইয়ের গান এখানে গাই নি। এ বইয়ে গান গাওয়ার কিছু নেই। কৌতুকের অন্তরালে জাতির কিছু বিষাদ লুকিয়ে আছে। বিষাদ যখন লুকিয়ে থাকে তখন সে বিষ মেরে ফেলা যায় না।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে ধরে নিলেও আসলে প্রশ্ন থেকে যায় এ উন্নয়ন কার জন্য। মনের দিক থেকে তো আমরা স্বাধীন হতে পারলাম না। অনেকে জানেই না, হাড়-চর্মের ভেতর যে মন আছে। সে মনের স্বাধীনতা থাকা চিন্তা করার ব্যাপার তো আরেক আরেক ধাপ স্বাধীনতার ব্যাপার। পুরোটা চোখ দিয়ে আকাশ দেখার আনন্দ বুকে ভরে নিয়ে যেন হাঁটি এ দিনের জন্য এগোই। অন্ধকার আছে, থাকবে। কিন্তু দীপ এখনো নিভে নাই, আমরা এখনো বিলীন হই নাই। পৃথিবী এখনো নির্মল, তরুণ।
সাম্প্রদায়িকতা শব্দটা দিয়ে একদিন আমরাই স্টিকার বানাব। প্রাচীন ও অচল শব্দের স্মৃতিতে সচল স্টিকার।
View all my reviews
Nov 23, 2017
কিত্তনখোলা - চলচ্চিত্র রিভিউ
রচয়িতা: সেলিম আল দীন
// যাত্রাদল-বেদে-মেলা-গ্রাম্য প্রভাবশালী-নেশা-অনিবেদনীয় প্রেম-যাত্রার মেয়ের জীবন-বেদেনীর জীবন-পুরুষ-নারীর মোহ //
"আইচ্ছা (রবিদা) একটা ফলের মইধ্যে এত রকমের সোয়াদ কেন? (আমলকি হাতে নিয়ে)
কষ্টা লাগে, চুকা লাগে, নোনতা লাগে আবার বেশি চাবাতি গেলে লাগে তিতা।
-ফলটা তোমার মতো। এক সোয়াদ থেইকা আরেক সোয়াদে লাফাইয়া বেড়ায়। কোনটা যে আসল বোঝা যায় না।"
—মিশে আছে বনশ্রীর বেদনার গাথা।
যাত্রায় পালা করতে বাধ্য বনশ্রীর পা বাঁধা অদৃশ্য সামাজিক শেকলে। পতিতা পল্লীতে ফিরে যেতে চায় না, কিন্তু যাত্রাদল থেকেও পালাবার পথ নেই। অদৃশ্য শেকল!
জবাবদিহিতা থাকে কেবল ডালিমনদের। তাদের ঈশ্বরেরা হয় যাত্রার সাধারণ দর্শকের মত। বিপদ ও আকুতির বার্তা পৌঁছায়, কিন্তু দাওয়াই দেয়ার ক্ষমতা থাকে না।
একে পুরুষ, আবার দুইয়ে অর্থ ও নেতাই ক্ষমতা— ইদুকে দিয়েছে দুশ্চরিত্রের বৈধতা। এরা ঈশ্বর, কারো মৃত্যুও তাদের লক্ষ্য-ব্যবসা-দুনিয়াদারী থেকে বিচ্যুত করে না।
Oct 31, 2017
চার হাজার বইয়ে কয় হাজার পাতা হে বৃটিশ লাইব্রেরী?
আগে কার গুণ গাইব? লাইব্রেরির নাকি ভারতীয় বইয়ের?
বস্তুর বিচারে বড় লাইব্রেরি দিয়ে বলি। আমি যখনই লাইব্রেরির কথা বলতে যাই আমাদের দেশের জাতীয় গণগ্রন্থাগারের অনাথ, দুর্বল চিত্র আমার চোখে ভেসে ওঠে। আমি কখনো এই দরিদ্রদশার কথা ভুলতে পারব না। আমাদের এত মানুষ, এত পাকা দালানে ঠাসা শহরে এত ক্ষমতাবান সরকার পোষে যেন এক অর্ধকদাকার বেড়াল। সে কথা আরেকদিন হবে। সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার তুমি বড় হও ভেতরে ভেতরে।
বৃটিশ লাইব্রেরি দুনিয়ার তাবৎ জাতীয় গ্রন্থাগারের মধ্যে সবচেয়ে বড়। অর্থাৎ বৃটিশ সরকার অন্য যেকোনো দেশের সরকারকে লাইব্রেরি দিয়ে হারিয়ে দিতে পেরেছে। কথাটা খুব বাছাই করা বাক্য হলেও তা আসলে বইয়ের সাথে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার ইচ্ছাশক্তি প্রকাশ করে।
আরো পড়ুন ভাল সময় কাটাতে:
http://www.sachalayatan.com/tareqanu/45581
https://bn.wikipedia.org/wiki/জাতীয়_গ্রন্থাগার
![]() |
বৃটিশ লাইব্রেরি - পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতীয় গ্রন্থাগার |
বৃটিশরা উপমহাদেশে প্রভুত্বের কারণে এখানকার সাহিত্য নিয়ে তাদের চর্চা ছিল, তারা তো আর ভারতবর্ষের মত গোঁড়া ছিল না যে ছাই উড়ানোর কষ্ট করতে নারাজ হবে। গত বছরের ডিসেম্বরে 'ইউকে ইন্ডিয়া ইয়ার অব কালচারাল প্ল্যান ফর-২০১৭' পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। উদ্দেশ্য বৃটিশ লাইব্রেরির ১৭১৩ থেকে ১৯১৪ পর্যন্ত সংগৃহীত চার হাজার ভারতীয় প্রিন্টেড বাংলা বইকে ডিজিটাইজ করা। সে ৪ হাজার বইয়ে আছে ৮ লক্ষাধিক পাতা। বাংলা বইয়ের পরিকল্পনাটুকু অবশ্য বড় প্রকল্পের অংশ— টু সেঞ্চুরিজ অব ইন্ডিয়ান প্রিন্ট। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে 'নিউটন ফান্ড'। এই পাইলট প্রকল্পটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব কালচারাল টেক্সটস অ্যান্ড রেকর্ডস, সৃষ্টি ইনস্টিটিউট অব আর্ট, ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের SOAS লাইব্রেরির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করা হচ্ছে।
তিনশ বছর আগ থেকে দুইশ বছরের ক্রমিক আয়োজন হতে যাচ্ছে ভারতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ, সাহিত্য নিয়ে গবেষণার খোরাক। দীর্গ সময়ের ব্যবধানে সেগুলো প্রকাশের স্বত্ব হারিয়েছে। আপাতত উইকিসংকলনে ৪০২০টি গ্রন্থভুক্তির কাজ শেষ। আরেকবার বলতে মন চাচ্ছে— ৮ লক্ষাধিক পাতার কাগজ এখন ছবি হয়ে সংকলিত গেছে উইকিসংকলনে। যথাশীঘ্রই ছবিগুলো থেকে ওসিআর, প্রুফ রিডিং, সম্পাদনার কাজ শুরু হয়ে যাবে।
তারা তৈরি হয়ে যাবে উইকিসংকলনেওর পরিচিত পরিবেশে।
কিন্তু যে কেউ চাইলে এখনো পড়তে পারে। ছবির পিডিএফে আমরা বই পড়ি না তা তো আর না।
আমরা হতভাগ্য জাত- সব কিছু সয় আমাদের। শুধু সয় না অভিজাত হয়ে গেলে বইকেও নিজের সাথে অভিজাতশ্রেণীর অঙ্গ মতন ভাবা।
ভারতীয় ডিজিটাল গ্রন্থাগার থেকে স্ক্যান
আরো পড়ুন ভাল সময় কাটাতে:
http://www.sachalayatan.com/tareqanu/45581
https://bn.wikipedia.org/wiki/জাতীয়_গ্রন্থাগার
Oct 21, 2017
পাঠ পর্যালোচনা - টমাস আলভা এডিসন

My rating: 3 of 5 stars
এডিসনের ব্যাপারে সমালোচনা করলে এডিসনের কিছু আসবে যাবে না, বরং বাড়িয়ে প্রশংসা করলে সাধারণ মানুষ হতাশ বোধ করতে পারে।
আমি একটি সন্তোষজনক দৃষ্টিভঙ্গি বেছে নিচ্ছি। কেউ যদি বলে সিটভর্তি বাসে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী ও তার বসার সুযোগ পাওয়ার হিসেব করে একটা যন্ত্র তার ভাড়া কেটে নিবে এমন যন্ত্র বানিয়ে তার পেটেন্ট নিবে তো কারো কি আপত্তি আছে? থাকার কথা নয়। ২৩৩২টি পেটেন্ট ছিল এডিসনের যার মধ্যে ১০৯৩টি যুক্তরাষ্ট্রে। যারা পদার্থবিজ্ঞান পড়ো তাদের বলি, এডিসন আসলে সত্যিকার অর্থে পদার্থবিজ্ঞানী নন, বিজ্ঞানের ভেতর বাস করা একজন ইঞ্জিনিয়ার। তাই ব্যবসা ভাল বোঝা তার দোষ নয়, ইঞ্জিনিয়ার এর সংজ্ঞার চাহিদা থেকেই ব্যবসায়ী কার্যক্রম নৈতিকভাবেও বৈধ।
এডিসন আমাদের কোনো নতুন তত্ব বা জ্ঞান দিয়ে যান নি। তিনি বরং জ্ঞানকে কৌশল বানিয়েছেন— তাও আবার হাজার হাজার কৌশল। তত্ত্ব যাতে কাজে লাগানো যায়, সেজন্যই আমাদের দরকার হয় ইঞ্জিনিয়ারদের। কারণ, তাত্ত্বিকেরা কাজ করেন রহস্য অবমুক্ত করার জন্য, আর প্রকৌশলীরা কাজ করেন রহস্যকে কাজে লাগিয়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য।
আমি চাই কেউ যেন হাজার পেটেন্ট দেখেই আকাশ থেকে পড়ে এডিসনের জন্য আহাজারিতে মরে না যায়। আবার তার অধ্যাবসায়ের ইতিহাসকেও কেউ যেন মূহুর্তের জন্য অসম্মান না করে। আহাজারির অর্থ সে পেরেছে আমি পারব না, আর সম্মানের কারণে তার পথে যে কেউ এগিয়ে যেতে পারবে।
পুরো বইটাতে তার জীবনের এত পর্যায় এল, কিন্তু টেসলার নাম এল না। এ দিক থেকে এডিসন যেমন টেসলার সাথে অবিচার করেছেন, লেখকও এডিসনের প্রতি একটু বাছবিচার করেছেন বলে মনে করি। তবে বইয়ের ক্ষেত্রে এটা হতেই পারে, বই তো আর উইকিপিডিয়া নয় যে ভাল খারাপ সবই থাকতে হবে। বইয়ের উদ্দেশ্য আলোর গল্প করা, কিন্তু সত্যকে ছেড়ে না দেওয়াও নয়। এক খাতিরে মিথ্যা কিছু প্রকাশ না করায় এ দোষ ঘাড় থেকে নেমে যায়।
বিজ্ঞানের সাথে প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বন্ধুত্বটা হল এরা একে অন্যের পরিপূরক। তা কেমন? প্রযুক্তি নিজ থেকে মানুষের কাছে পৌঁছে যায়, কিন্তু নিজ থেকে জন্ম নিতে পারে না। বিজ্ঞান নিজেই জন্ম লাভ করে সত্য, কিন্তু আবার একা একা পৌঁছাতে পারে না বড় জনগোষ্ঠীর কাছে। এই পৌঁছে দেয়ার কাজটা করে প্রযুক্তি।
বিজ্ঞানের নায়কদের বলি বিজ্ঞানী, প্রযুক্তির কারিগরদের বলি উদ্ভাবক।
দুই-ই আমাদের বুদ্ধিমত্তার জয় নির্ধারক।
View all my reviews
Aug 9, 2017
শুভ জন্মদিন, অ্যামেদেও অ্যাভোগ্যাড্রো!
পদার্থবিজ্ঞানকে বলা হয় বিজ্ঞানের পিতা। কিন্তু যতই বাপ হোক না কেন এরও একটা নির্ভরশীলতা আছে— প্রকৃতির সবচেয়ে বিশুদ্ধতম বিষয় গণিতের উপর। প্রকৃতির সবচেয়ে বিস্তর ভাষা পদার্থবিজ্ঞান আর পদার্থবিজ্ঞানের ভাষা হল গণিত।
আজ একজন মহান বিজ্ঞানীর জন্মদিন। গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানী অ্যামেদেও অ্যাভোগ্যাড্রো, যিনি আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত তার অ্যাভোগ্যাড্রো নীতির জন্য।
আজ একজন মহান বিজ্ঞানীর জন্মদিন। গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানী অ্যামেদেও অ্যাভোগ্যাড্রো, যিনি আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত তার অ্যাভোগ্যাড্রো নীতির জন্য।
![]() |
অ্যামেদেও অ্যাভোগ্যাড্রো (আগস্ট ৯, ১৭৭৬ – জুলাই ৯, ১৮৫৬)
তার জন্ম হয়েছিল ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ আগস্টে ইতালির তুরিনে। বাবা ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট এবং সিনেটর। তরুণ অ্যাভোগ্যাড্রোও তার বাবার দেখানো পথে আইনে পড়াশোনা ও চর্চা করেন। কিন্তু 'ইতিবাচক দর্শন' এর কাছে ক্রমে আইনের আগ্রহ ক্ষয় পেতে লাগল। এই ইতিবাচক দর্শন (তদানীন্তন নাম) ছিল আসলে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান। পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতের জগৎটা তখন অত বড় ছিল না যে পদার্থবিজ্ঞানের উপর নামফলক 'দর্শন' দেখে আমাদের অবাক হওয়া উচিত। তার আগ্রহ দানা বাঁধায় বসে রইল না, এগিয়ে চলল ভৌত রসায়নকে ঘিরে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান পাঠের মধ্য দিয়ে।
১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে এসে অ্যাভোগ্যাড্রো তার প্রথম বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশ করলেন লবণাক্ত দ্রবণের বৈদ্যুতিক আচরণের উপর। তিন বছরের মধ্যে আইন ব্যবসা একেবারেই ছেড়েই দিলেন এবং আর গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের পড়ানো শুরু করলেন তুরিনের এক হাইস্কুলে। সম্ভবত বিজ্ঞানের ইতিহাসেই মোর ঘোরার শুরুটা হয়ে গেল। সবচেয়ে ভাল আইনজীবী হয়েও তিনি যা করতে না পারতেন, সবচেয়ে সেরা বিজ্ঞানী না হতে পেরেও তিনি তার চেয়ে বড় কিছু করে ফেলবেন। বিজ্ঞানের শক্তির সামনে দাঁড়ানোর কোনো যুক্তির এত সাহস নেই।
এদিকে ১৮০৯ সালে তিনি রয়েল কলেজ অব ভার্সেলির সিনিয়র টিচার হয়ে গেলেন। দুই বছর পর ১৮১১য় অ্যাভোগ্যাড্রোর সময় হয়ে গেল বিজ্ঞানের ইতিহাসে অমর হয়ে যাবার। তিনি দিলেন তার সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক অবদান, একটি হাইপোথিসিস (প্রকল্প) মাত্র! কিন্তু এই হাইপোথিসিস হিসেব বদলে দিতে লাগল। হাইপোথিসিস থেকে হয়ে গেল অ্যাভোগ্যাড্রো আইন। আবার আইন!— তবে বিজ্ঞানের আইন! নির্ভরতার প্রতীক।
"একই তাপমাত্রায় এবং একই চাপে সমআয়তন সকল গ্যাসের অণুর সংখ্যা সমান।"
হাইপোথিসিস একটি বৈজ্ঞানিক প্রস্তাবনা, স্বভাবতই প্রমাণের আগে এটা বিজ্ঞানমহলে দাঁড় করানো কঠিন। অ্যাভোগ্যাড্রো সূত্রের জন্য এক দশক সময় লেগে গিয়েছিল এর গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে, তাও অংশত, কারণ তখনকার নামকরা বিজ্ঞানী জন ডাল্টন, জন্স জ্যাকব বার্জেলিয়াস প্রমুখদের তত্ত্বের সাথে না সম্মত হচ্ছিল না এই হাইপোথিসিস।
১৮২০ খ্রিস্টাব্দে অ্যাভোগ্যাড্রো তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের সম্মানজনক অধ্যাপক পদে আসীন হন। কিন্তু, রাজনৈতিক কারণে কয়েক বছর পরেই পদ হারান। পরবর্তীতে বছর দশেক ফারাকে পুনর্বহাল হন এবং ৭৪ বছর বয়স পর্যন্ত আসীন থাকেন। অ্যামেদেও অ্যাভোগ্যাড্রো ৭৯ বছর বয়সে ৯ জুলাই, ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
শুভ জন্মদিন, বিজ্ঞানী অ্যামেদেও অ্যাভোগ্যাড্রো!
|
Aug 8, 2017
নোবেল বক্তৃতা— ওরহান পামুক
![]() |
সাহিত্যে নোবেল ২০০৬ জয়ী ওরহান পামুক নোবেল বক্তৃতায় |
আপনি কেন লিখেন?— আমার লেখনী জীবনে সবচেয়ে বেশিবার সম্মুখীন হওয়া প্রশ্ন। বেশিরভাগ সময় লোকে বলতে চায়: কী লাভ লিখে? কেন আপনি আপনার সময় এই অদ্ভূত এবং অসম্ভব কাজে ব্যয় করেন? কেন লিখেন…
"তখন আপনাকে একটি অজুহাত দিতে হবে, লেখালেখির জন্য জন্য ক্ষমা চাইতে হবে"— ঠিক এমন একটা দৃশ্য আমার মনে হয় প্রতিবার যখনই আমি এই প্রশ্ন শুনি। কিন্তু প্রতিবারই আমি ভিন্ন উত্তর দেই… কখনো বলি: আমি জানি না আমি কেন লিখি, কিন্তু এতে খুব ভাল লাগা কাজ করে। আমি আশা করি আপনারও একই রকম লাগবে যখন আপনি আমাকে পড়বেন।
কখনো বলি যে আমি খুব রাগী, তাই আমি লিখি। বেশিরভাগ সময় রুমে একা থাকতে জিদ চাপে, তাই বসে বসে লিখি।
আমার শৈশবে আমি একজন চিত্রশিল্পী হতে চেয়েছিলাম। আমি প্রতিদিন রঙ করতাম। আমার এখনো সেই শিশুসুলভ আনন্দ এবং সুখের অনুভূতি কাজ করে যখন আমি লিখতে বসি।
আমি লিখি আমার শৈশবের পুরনো সুখ খুঁজে পেতে। আর তাই আমার জন্য সাহিত্য এবং লেখালেখি আমার সুখের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অথবা এর অভাব… আমার বেদনার কারণ। আমার শৈশবে, আমি আনন্দে কাটাতাম, প্রচুর রঙ করতাম আর বড় সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসি দিত। সকলেই ছিল ভদ্র, নম্র এবং স্নেহপরায়ণ। আমি এগুলো সব লিখেছি আমার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ইস্তাম্বুলে। ইস্তাম্বুল প্রকাশিত হওয়ার পর, কেউ কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করল: আপনার আত্মজীবনী লিখে ফেলার জন্য আপনার বয়স কি একটু বেশিই কম নয়?
আমি নীরবতা বজায় রাখতাম। সাহিত্য আনন্দের বিষয়, আমি বলতে চেয়েছিলাম, শিশুসুলভ আচরণ বাঁচিয়ে রাখার কথা, নিজের ভেতরের শিশুমনটিকে জীবিত রাখা… তো, বছর কয়েক পর এখন এসে আমি তার পুরষ্কার পেলাম। এবার সেই একই লোকগুলো প্রশ্ন করা শুরু করল, নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার জন্য আপনার বয়সটা একটু কম হয়ে গেল না? (দর্শকশ্রোতাদের মধ্যে হাসির রোল)
আদতে নোবেল পুরষ্কারের ঘোষণা শোনার পর থেকে আমি সবচেয়ে বেশি শুনেছি: নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার অনুভূতি কী? আমি বলি, ওহ! এটা দারুণ। সব বড় বড় গণ্যমান্য লোক ক্রমাগত আমাকে হাসি বিলিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎই সকলেই আবারো ভদ্র, নম্র এবং স্নেহপরায়ণ হয়ে উঠল। সত্যি বলতে, আমি প্রায়ই রাজপুত্রের মত অনুভব করেছি। একটি বাচ্চার মত অনুভব করেছি।
তখন মনে হয়েছে, আমি বুঝতে পারলাম কেন আমি মাঝে মাঝে এত রেগে যেতাম। এই পুরষ্কার আমাকে নিয়ে গেছে আবেগাপ্লুত খুশির শৈশবে আর সেই অচেনা লোকদের মায়ায়, আমাকে অন্তত এই বয়সে(৫৪) দেয়া যেত না, যেটা অনেকে মনে করেন বেশিই শীঘ্র, কিন্তু তারও অনেক আগে, সম্ভবত আমার জন্মের দুই সপ্তাহ পর দেয়া হলে আমি উপভোগ করতে পারতাম রাজপুত্রশিশু হয়ে আমার সারাটি জীবন। এমনকি… এখনই এটা চিন্তা করা যেতে পারে… এই সেই কারণ যেকারণে আমি লিখতে পছন্দ করি এবং আমি এটা চালিয়ে যাব। (করতালি)
ডিসেম্বর ১০, ২০০৬।
Jul 23, 2017
গণিত অলিম্পিয়াডের প্রশ্ন ও পাঠ্য নির্দেশনা ও বই সংকলন
যারা বিশ্বাস করো গণিত দিয়ে বিশ্ব জয় করা যায় তাদের জন্য...
২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দেশে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক, বিভাগীয়, জাতীয় পর্যায়ের প্রশ্নসমূহের সংকলন রয়েছে। যেইসব বাবুরা আগামী দিনের আসিফ, ধনঞ্জয়, মুন, চমক হাসান হতে চাও তাদের জন্য। গুগল ড্রাইভে যোগ করে নাও আর ডাউনলোড করে চর্চা শুরু করে দাও।
২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দেশে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক, বিভাগীয়, জাতীয় পর্যায়ের প্রশ্নসমূহের সংকলন রয়েছে। যেইসব বাবুরা আগামী দিনের আসিফ, ধনঞ্জয়, মুন, চমক হাসান হতে চাও তাদের জন্য। গুগল ড্রাইভে যোগ করে নাও আর ডাউনলোড করে চর্চা শুরু করে দাও।
https://drive.google.com/open?id=0B6clXcy_fidDY3lOLS1NejZXYWM বা https://goo.gl/wgkc2M এখান থেকে।
শুধু প্রশ্ন থাকবে আর প্রস্তুতি থাকবে না, সেই অবিচার এই ফোল্ডারে নেই। কী কী পড়ে এগুনো যাবে তাও দেয়া আছে। আমি আমার এক ছোটভাইয়ের কাছ থেকে নিয়েছি, বসে সাইটের প্রশ্নগুলোকে আনজিপ করে আপ দিয়েছি যেন প্রতিটা কন্টেন্ট ধরে ধরে এক্সেস করা যায়।
শেয়ার করি ওর চেয়েও ছোট সকল ভাই-বোনদের জন্য। এবার বাংলাদেশ গণিত দলে কোনো মেয়ে ছিল না। পদার্থবিজ্ঞানের দলে ছিল
:) ।
এবারের আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের প্রথম দশটি দলে ৬০ জনের মধ্যে ছিল ২ জন মেয়ে। মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়।

এবারের আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের প্রথম দশটি দলে ৬০ জনের মধ্যে ছিল ২ জন মেয়ে। মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়।
কিন্তু রক্ষণশীল দেশ ইরানের একটা আশাপ্রদ গল্প আছে। মেয়েরা কিভাবে গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিবে ইরান থেকে, কেউই তো আগে নেয় নি! এই অবস্থায় ভাগ্য,পরিস্থিতি মিলিয়ে ১৯৯৪ এ দুইজন মেয়ে অংশ নিল। তাদের একজন মরিয়ম মির্জাখানি। আরেকজন রয়া বেহেশতী এখন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গণিতের প্রফেসর।
মির্জাখানি কতখানি গণিতবিদ শোনো। প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ১ নাম্বার কম পেয়ে সোনার মেডেল।
পরের বছর ৪২ এ ৪২ তুলে ব্যক্তিগত ফলাফলে প্রথমস্থান। ঢুকে গেলেন Hall of Fame এ।
প্রথম নারী হিসেবে জিতে নেন গণিতের সর্বোচ্চ পদক ফিল্ডস মেডেল। [২০১৪]
পরের বছর ৪২ এ ৪২ তুলে ব্যক্তিগত ফলাফলে প্রথমস্থান। ঢুকে গেলেন Hall of Fame এ।
প্রথম নারী হিসেবে জিতে নেন গণিতের সর্বোচ্চ পদক ফিল্ডস মেডেল। [২০১৪]
রক্ষণশীল ইরানে যদি মির্জাখানি পারেন তো বাংলাদেশেও কেউ পারবে।
পৃথিবীময় কার্দাশিয়ানের যুগে মির্জাখানির জন্য চেয়ে আছে #বাংলাদেশ। জাগো গো ভগিনী। সাথে জাগরূক ভাইয়ারা।
পৃথিবীময় কার্দাশিয়ানের যুগে মির্জাখানির জন্য চেয়ে আছে #বাংলাদেশ। জাগো গো ভগিনী। সাথে জাগরূক ভাইয়ারা।
Jun 23, 2017
সাধবৃক্ষ
এক পথিক ভ্রমণ করিতে করিতে হঠাৎ করিয়া স্বর্গে আসিয়া উপনীত হইলেন!
আচমকাই তাহার চারপাশ তাহাকে যেন থমকাইয়া দিল।
কেউ কোথাও নেই, অথচ কে যেন ভেতর থেকে বলিতেছে— ইহা স্বর্গ, ইহাই স্বর্গ!
পথিক এক গাছের ছায়াতলে গিয়া বসিল। সে বৃক্ষের নাম— সাধবৃক্ষ। সাধবৃক্ষের নিচে দাঁড়াইয়া যাহা চাওয়া হয় তাহাই পাওয়া যায়।
পথিক ভাবিল, "আমি ক্ষুধার্ত, কিছু খেতে পেলে মন্দ হইত না।" ভাবিতে বিলম্ব হইল,
তাহার সামনে সরাৎ সরাৎ টেবিল আসিয়া খাবারে ভরিয়া যাইতে বিলম্ব হইল না।
পথিক অবাক না হওয়ার কোনো সুযোগ পাইল না।
পথিক ভাবিল— একি! ইহা তো হইতে পারে না।
পুনরায় ভাবিতে কেবল বিলম্ব হইল, হুশ হাশ করিয়া টেবিল খাবার সমেত অদৃশ্য হইতে সময় লইল না।
ভারী মছিবত তো!
"আবার ফিরিয়া আসুক আহার!"- ভাবিতেই হাজিরা ঘটিয়া গেল।
প্রহর ধরিয়া পথিক খাওয়া চালাইল। তাহার জীবনে এত স্বাদের আহার সে করে নাই।
আহার ফুরাইলে পানীয়ের সাধ জাগিল— সাধবৃক্ষ কোনরূপ অন্যথা করিল না।
কারণ, স্বর্গে কোনো বাধা নাই। নিয়ম-অনিয়মের বালাই নাই। অনিয়মও সেথা নিয়ম।
অতি আহারে ক্লান্ত পথিক শুইয়া রহিল। বৃক্ষতলে শ্রান্তির সাথে মদ্যপান করিতে লাগিল।
মনে আয়েশে আশ্চর্যবোধ চাড়া দিতে লাগিল। তাহার লক্ষণ তাহার হুশের ভিতর থেকে ছুটিল।
"কেন এমন অলৌকিক ঘটনা ঘটা লাগবে! এটা হওয়ার দরকার কী? এত্ত ভাল হওয়ার মাঝে নিশ্চয়ই ঝামেলা আছে।
এ নিশ্চয়ই ভূতেদের কাজ। তারা আমার সাথে তামাশা করিতেছে!"
ভাবিতে ঘোর লাগিল, কিন্তু ঘোরের সাধও ফিরিয়া গেল না। সত্যই তাহার সম্মুখে ভূতের আবির্ভাব ঘটিল।
পৃথিবীর অসম্ভব জিনিসও এইখানে সম্ভব হইবে সেই খেয়াল তাহার ছিল না— থাকার কথাও না। তারা দেখিতে
ছিল তেমনি ভয়ংকর— যেমনটি পথিক ভাবিয়াছিল।
আতংকে মদের বোতল ছুঁড়িয়া ফেলিল। মারিয়া ফেলিবে নাকি!
ভাবিতে সময় পার হইল। তাহার মরিতে ক্ষণকাল ব্যয় হইল না।
স্বর্গে মৃত্যু নাই— কিন্তু ইচ্ছার উপর অন্য কোনো কথা নাই। সাধ মিটানো হইবেই— ইহাই স্বর্গের পণ, নিয়ম।
মানুষ তাহার ইচ্ছার জগতেই বসবাস করে। তাহার ইচ্ছাই তাহাকে ঠেলিয়া লইয়া চলে। ইচ্ছা হয়ত তাহার শক্তি— কিন্তু সে ইচ্ছারই অধীন। ইচ্ছাশক্তিই তাই সবচেয়ে ক্ষমতাবান।
আচমকাই তাহার চারপাশ তাহাকে যেন থমকাইয়া দিল।
কেউ কোথাও নেই, অথচ কে যেন ভেতর থেকে বলিতেছে— ইহা স্বর্গ, ইহাই স্বর্গ!
পথিক এক গাছের ছায়াতলে গিয়া বসিল। সে বৃক্ষের নাম— সাধবৃক্ষ। সাধবৃক্ষের নিচে দাঁড়াইয়া যাহা চাওয়া হয় তাহাই পাওয়া যায়।
পথিক ভাবিল, "আমি ক্ষুধার্ত, কিছু খেতে পেলে মন্দ হইত না।" ভাবিতে বিলম্ব হইল,
তাহার সামনে সরাৎ সরাৎ টেবিল আসিয়া খাবারে ভরিয়া যাইতে বিলম্ব হইল না।
পথিক অবাক না হওয়ার কোনো সুযোগ পাইল না।
পথিক ভাবিল— একি! ইহা তো হইতে পারে না।
পুনরায় ভাবিতে কেবল বিলম্ব হইল, হুশ হাশ করিয়া টেবিল খাবার সমেত অদৃশ্য হইতে সময় লইল না।
ভারী মছিবত তো!
"আবার ফিরিয়া আসুক আহার!"- ভাবিতেই হাজিরা ঘটিয়া গেল।
প্রহর ধরিয়া পথিক খাওয়া চালাইল। তাহার জীবনে এত স্বাদের আহার সে করে নাই।
আহার ফুরাইলে পানীয়ের সাধ জাগিল— সাধবৃক্ষ কোনরূপ অন্যথা করিল না।
কারণ, স্বর্গে কোনো বাধা নাই। নিয়ম-অনিয়মের বালাই নাই। অনিয়মও সেথা নিয়ম।
অতি আহারে ক্লান্ত পথিক শুইয়া রহিল। বৃক্ষতলে শ্রান্তির সাথে মদ্যপান করিতে লাগিল।
মনে আয়েশে আশ্চর্যবোধ চাড়া দিতে লাগিল। তাহার লক্ষণ তাহার হুশের ভিতর থেকে ছুটিল।
"কেন এমন অলৌকিক ঘটনা ঘটা লাগবে! এটা হওয়ার দরকার কী? এত্ত ভাল হওয়ার মাঝে নিশ্চয়ই ঝামেলা আছে।
এ নিশ্চয়ই ভূতেদের কাজ। তারা আমার সাথে তামাশা করিতেছে!"
ভাবিতে ঘোর লাগিল, কিন্তু ঘোরের সাধও ফিরিয়া গেল না। সত্যই তাহার সম্মুখে ভূতের আবির্ভাব ঘটিল।
পৃথিবীর অসম্ভব জিনিসও এইখানে সম্ভব হইবে সেই খেয়াল তাহার ছিল না— থাকার কথাও না। তারা দেখিতে
ছিল তেমনি ভয়ংকর— যেমনটি পথিক ভাবিয়াছিল।
আতংকে মদের বোতল ছুঁড়িয়া ফেলিল। মারিয়া ফেলিবে নাকি!
ভাবিতে সময় পার হইল। তাহার মরিতে ক্ষণকাল ব্যয় হইল না।
স্বর্গে মৃত্যু নাই— কিন্তু ইচ্ছার উপর অন্য কোনো কথা নাই। সাধ মিটানো হইবেই— ইহাই স্বর্গের পণ, নিয়ম।
মানুষ তাহার ইচ্ছার জগতেই বসবাস করে। তাহার ইচ্ছাই তাহাকে ঠেলিয়া লইয়া চলে। ইচ্ছা হয়ত তাহার শক্তি— কিন্তু সে ইচ্ছারই অধীন। ইচ্ছাশক্তিই তাই সবচেয়ে ক্ষমতাবান।
May 16, 2017
পরিবহন ব্যবস্থায় বিভিন্ন দেশের ওয়্যারলেস চার্জিং পরীক্ষামূলক প্রজেক্ট
টেকসই পরিবহন ব্যবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ির বেশ সম্ভাবনাপূর্ণ ভবিষ্যতের অঙ্গীকার লক্ষ করা যায়। কিন্তু এই পরিবহন ব্যবস্থায় মাথাব্যাথার কারণ হল ভারী ব্যাটারী, রিচার্জ করার সমস্যা। রিচার্জেবল ব্যাটারী খুবই ব্যয়বহুল আবার রিচার্জ করতেও যথেষ্ঠ সময় নিয়ে থাকে।
পরিবেশের সাথে একটু সখ্যতা করল বটে, কিন্তু সময় ও অর্থের সাথে বৈরীতা করে গতিশীল অর্থনৈতিক সাধনা করা মানবসমাজের জন্য একটা সমস্যা ঠিকই রেখে দিল।
পরিবেশের সাথে একটু সখ্যতা করল বটে, কিন্তু সময় ও অর্থের সাথে বৈরীতা করে গতিশীল অর্থনৈতিক সাধনা করা মানবসমাজের জন্য একটা সমস্যা ঠিকই রেখে দিল।
![]() |
ইসরায়েল পরীক্ষামূলকভাবে তারবিহীন চার্জিং এর মাধ্যমে পরিবহন ব্যবস্থায় অভিনবত্ব আনার প্রচেষ্টা করছে। |
ইসরায়েল একটি অভিনব প্রচেষ্টা করছে, রাস্তায় তারবিহীন চার্জ করার মাধ্যমে। অনেকটা বৈদ্যুতিক ট্রেনে যেমন সরাসরি লাইন থেকে শক্তি প্রদান করা হয়, তেমনি রাস্তা দিয়ে তারবিহীন চার্জারের মাধ্যমে গাড়ি শক্তি গ্রহণ করে চলবে। এতে করে আর আগের মত ভারী ব্যাটারী ব্যবহার করতে হচ্ছে না। এমনকি রিচার্জের উদ্দেশ্যে আলাদা করে থেমে সময় খরচ করতে হচ্ছে না। ঠিক যেমনটা গতিশীল পরিবহন ব্যবস্থা চেয়েছে প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতায় উন্মীলিত মানুষেরা।
বর্তমানে ইসরায়েলের রাজধানী তেল-আবিবের রাস্তায় ৮০ ফুট (মাত্র ২৪ মিটারের কিছু বেশি) দৈর্ঘ্যে এর প্রোটোটাইপ প্রকল্প চলছে। পরীক্ষামূলক প্রকল্প সফল হলে ২০১৮ সালের মধ্যে এটি আধাকিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ করা হবে এবং পরবর্তীতে ইসরায়েলের এইলাট শহর এবং রমন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যকার ১১ কিলোমিটার রাস্তায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। চলবে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ শাটল সার্ভিস।
ইসরায়েলিরাই যে প্রথম তা কিন্তু নয়, কোরিয়ানরা বরং এই পদ্ধতি আরো আগেই ধরে ফেলেছে। Korea Advanced Institute of Science and Technology ১৫ মাইল দীর্ঘ রাস্তায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তারবিহীন পদ্ধতিতে যেভাবে মোবাইল চার্জ দেয়া হয়, ঠিক একই নীতি ব্যবহার করা হয়েছে এখানে, কেবল একটু বৃহত্তর স্কেলে। বৈদ্যুতিক আবেশের নীতি ব্যবহৃত হয়েছে এখানে।
কোরিয়াতে রাস্তা থেকে বাসের রিচার্জিং মেকানিজম তল মাত্র ১৭ সেন্টিমিটার ব্যবধানে থাকে। দূরত্ব বাড়লে চার্জিং এফিসিয়েন্সি (দক্ষতা) কমে যায়। এ পরিস্থিতিতে ১০০কিলোওয়াটে চার্জিং কর্মদক্ষতা ৮৫%। চার্জিং প্লেটগুলো বিস্তারের হিসেব করলে তারা রাস্তার ৫-১৫% জায়গা খরচ করেছে। কোরিয়াতে এই পরীক্ষণটি চলছে দুটো ইনডাকশন বাস দিয়ে, সফল হলে অবশ্যই সেটা বেড়ে দাঁড়াবে।
ইসরায়েলিরাই যে প্রথম তা কিন্তু নয়, কোরিয়ানরা বরং এই পদ্ধতি আরো আগেই ধরে ফেলেছে। Korea Advanced Institute of Science and Technology ১৫ মাইল দীর্ঘ রাস্তায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তারবিহীন পদ্ধতিতে যেভাবে মোবাইল চার্জ দেয়া হয়, ঠিক একই নীতি ব্যবহার করা হয়েছে এখানে, কেবল একটু বৃহত্তর স্কেলে। বৈদ্যুতিক আবেশের নীতি ব্যবহৃত হয়েছে এখানে।
কোরিয়াতে রাস্তা থেকে বাসের রিচার্জিং মেকানিজম তল মাত্র ১৭ সেন্টিমিটার ব্যবধানে থাকে। দূরত্ব বাড়লে চার্জিং এফিসিয়েন্সি (দক্ষতা) কমে যায়। এ পরিস্থিতিতে ১০০কিলোওয়াটে চার্জিং কর্মদক্ষতা ৮৫%। চার্জিং প্লেটগুলো বিস্তারের হিসেব করলে তারা রাস্তার ৫-১৫% জায়গা খরচ করেছে। কোরিয়াতে এই পরীক্ষণটি চলছে দুটো ইনডাকশন বাস দিয়ে, সফল হলে অবশ্যই সেটা বেড়ে দাঁড়াবে।
Apr 21, 2017
অদ্রি তলে বসে শিলাখন্ড, বহে অদ্রি ভার
লাইনটি অক্ষয়কুমার বড়ালের মানব বন্দনা কবিতার। আমি অবশ্য কবিতা পড়তে গিয়ে খুঁজে পাইনি এই লাইন। পেয়েছি মুনির হাসান স্যারের লেখা পড়তে পড়তে। হঠাৎ মনে হল, চারপাশটা আমার চেপে আসছে। ছোটখাটো কিছু না, দীর্ঘ সময় ধরে উঁচু উঁচু অদ্রিরা ধেয়ে আসছে, অদ্রির যে বিশালতা সেই বিশালতার প্রতিশব্দ সময়। শিলাখন্ড খুবই অল্প সময়, আমার সময়ও খুব অল্প। আমি হয়ত অদ্রিভার বইতে পারব না, কিন্তু পাষাণচাপা অদ্রিতলেও তো টিকতে পারব না। বাইতে হবে, অদ্রিতল থেকে অদ্রিগাত্রে। আমার সময় হয়ত কম, অদ্রির তো আর কম নয়! বাইতে থাকলে কিছুটি পাব নিশ্চয়ই? না পাইও বা যদি, অন্তত অদ্রিসম-সময়ভারে তো আর মিলিয়ে যাব না।
বইতে থাকুক অদ্রির প্রহরস্রোত, আমি যেন গাইতে থাকি স্রোতের মুখে...
লুই আই কানের বিশ্ববিদ্যালয়। কতটা ঘোরা যায় দেখি। বাইরে বৃষ্টি পড়ছে, নিভৃতে অনেক কল্পনা খেলে যায়। পেনের সাইটে দেখি তাদের নামে সৃষ্টির গল্প- Pennovation Works.
কত সাবলীলতায় Proper Noun হয়ে যাচ্ছে Abstract Noun.
আমার কাছে প্রশ্ন জাগে, আমরা কতটা SUSTain করব? কে জানে? তবুও ভাবি একদিন বুকে অনেক দম এসে জমবে।
ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংহাম
ডিপার্টমেন্টের কেউ একজন বড়ভাই (ক** চ***) টিএ হিসেবে চান্স পেয়ে গেল, আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আগস্টে জয়েন, ২২০০০ ডলার বাৎসরিক স্কলারশিপ। কাজের ক্ষেত্র নন লিনিয়ার অপটিক্স। হিসেব রাখি। খায়েশি হিসেব।
এখানটায় একজন প্রিয় লোক আছেন। আমাদের ঘরের ছেলে। বাংলা উইকিপিডিয়ার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষক ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা। প্রফেসর ড. রাগিব হাসান। [স্কলারে] [লিঙ্কডইন]
ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংহাম
ডিপার্টমেন্টের কেউ একজন বড়ভাই (ক** চ***) টিএ হিসেবে চান্স পেয়ে গেল, আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আগস্টে জয়েন, ২২০০০ ডলার বাৎসরিক স্কলারশিপ। কাজের ক্ষেত্র নন লিনিয়ার অপটিক্স। হিসেব রাখি। খায়েশি হিসেব।
এখানটায় একজন প্রিয় লোক আছেন। আমাদের ঘরের ছেলে। বাংলা উইকিপিডিয়ার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষক ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা। প্রফেসর ড. রাগিব হাসান। [স্কলারে] [লিঙ্কডইন]
নিজের ইউনিভার্সিটির সাইট দেখে চোখ সয়ে গেছে। সেরা দশের (USA#4) এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইটে ঘুরতে গিয়ে যেন বিপদে পড়ে গেলাম। পাতায় পাতায় এত পড়ালেখার কথা কেন?
কে করে এগুলো? লিডার পেইজে কিনা সাতজন নোবেল লরিয়েটের নাম!
কি আশ্চর্য! আমার দেশের নেতারা তো কখনো নোবেল পাবেন না। যারা পেয়েছেন বা পেতে পারেন তাদের তো আবার আমরা নেতা বলি না! আমাদের নেতারা 'নেতা' আমাদের সংজ্ঞায়!
তাদের 'নেতা'দের জন্য সংজ্ঞায়ন করতে হয়নি, বিশ্ব মেনে নিয়েছে।
* সাইটে রিসার্চ সেকশন অবশ্য পাঠ্য।
Mar 19, 2017
বড় মেশিন গোল সার্ন, কণা ভাঙে খান খান!
সার্নের LHCb ঘোষণা দিল আরো পাঁচটি নতুন কণা আবিষ্কারের খবর!
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় যন্ত্র ২৭ কিলোমিটার পরিধির লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে সাতটি পার্টিকেল ডিটেক্টর পয়েন্ট রয়েছে। সাতটির একটি হল LHCb- লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার বিউটি।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় যন্ত্র ২৭ কিলোমিটার পরিধির লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে সাতটি পার্টিকেল ডিটেক্টর পয়েন্ট রয়েছে। সাতটির একটি হল LHCb- লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার বিউটি।
![]() |
সার্নের LHCb এর অভ্যন্তরীণ চিত্র |
যে পাঁচটি কণা পাওয়া গেছে সেগুলো ওমেগা-সি-জিরোর (Ωc0- প্রতীকটি এখানে লেখা যাচ্ছে না) পাঁচটি উত্তেজিত দশা।
ওমেগা-সি-জিরো একটি ব্যারিয়ন কণা।
ব্যারিয়ন হল হ্যাড্রনের একটা প্রকার, আরেকটা প্রকার হল মেসন।
প্রকৃতির চারটি মৌলিক বলের মহাকর্ষ আর তড়িৎচৌম্বক আমাদের মুখ ও মস্তিষ্কে উজ্জ্বল।
ওমেগা-সি-জিরো একটি ব্যারিয়ন কণা।
ব্যারিয়ন হল হ্যাড্রনের একটা প্রকার, আরেকটা প্রকার হল মেসন।
প্রকৃতির চারটি মৌলিক বলের মহাকর্ষ আর তড়িৎচৌম্বক আমাদের মুখ ও মস্তিষ্কে উজ্জ্বল।
এই যে হ্যাড্রন সাহেবকে নিয়ে আসলাম, উনার কারবার হল সবল নিউক্লিয় বল এবং এর মিথষ্ক্রিয়া নিয়ে। হ্যাড্রনের এক রাস্তা চলে গেছে ব্যারিয়নে। এর মধ্যে ওমেগা ব্যারিয়ন হল ব্যারিয়নের একটা উপরাস্তা আরকি।
ভয়ের কারণ নাই, পথ হারানোর ভয় নাই। জিনিস সোজা।
ব্যারিয়ন একটা যৌগিক কণা- তিনটি কোয়ার্কের সমন্বয়ে এক একটা ব্যারিয়ন গঠিত হয়। আমাদের সবচেয়ে চেনা ব্যারিয়ন হল প্রোটন আর নিউট্রন। স্পষ্টত, প্রোটন আর নিউট্রনও যৌগিক কণা। মৌলিক উপাদান হচ্ছে কোয়ার্ক।
:)
কোয়ার্কের ছয়টা সদস্য (এই শেষ, প্রায় ফুরিয়ে এনেছি গিট্টু)
ছয়টা কোয়ার্কের নাম না বললে পাপ হয়ে যাবে।
আপ, ডাউন, চার্ম, স্ট্রেঞ্জ, টপ এবং বটম কোয়ার্ক।
এই ছয়টা কোয়ার্ক থেকে বিভিন্নভাবে তিনটা করে কোয়ার্ক মিলে গঠন করে এক একটা ব্যারিয়ন।
আমাদের ওমেগা-সি-জিরো ব্যারিয়ন কণাটির নাম হচ্ছে চার্ম ওমেগা (Charmed Omega). দুইটা স্ট্রেঞ্জ কোয়ার্ক আর একটা চার্ম কোয়ার্ক মিলে গঠন করে একটা চার্ম ওমেগা। যেহেতু এর কোনো নিট আধান নেই তাই এর প্রতীক ওমেগা-সি-জিরো।
ব্যারিয়ন একটা যৌগিক কণা- তিনটি কোয়ার্কের সমন্বয়ে এক একটা ব্যারিয়ন গঠিত হয়। আমাদের সবচেয়ে চেনা ব্যারিয়ন হল প্রোটন আর নিউট্রন। স্পষ্টত, প্রোটন আর নিউট্রনও যৌগিক কণা। মৌলিক উপাদান হচ্ছে কোয়ার্ক।

কোয়ার্কের ছয়টা সদস্য (এই শেষ, প্রায় ফুরিয়ে এনেছি গিট্টু)
ছয়টা কোয়ার্কের নাম না বললে পাপ হয়ে যাবে।
আপ, ডাউন, চার্ম, স্ট্রেঞ্জ, টপ এবং বটম কোয়ার্ক।
এই ছয়টা কোয়ার্ক থেকে বিভিন্নভাবে তিনটা করে কোয়ার্ক মিলে গঠন করে এক একটা ব্যারিয়ন।
আমাদের ওমেগা-সি-জিরো ব্যারিয়ন কণাটির নাম হচ্ছে চার্ম ওমেগা (Charmed Omega). দুইটা স্ট্রেঞ্জ কোয়ার্ক আর একটা চার্ম কোয়ার্ক মিলে গঠন করে একটা চার্ম ওমেগা। যেহেতু এর কোনো নিট আধান নেই তাই এর প্রতীক ওমেগা-সি-জিরো।
![]() |
পাঁচটি ওমেগা ব্যারিয়ন চিহ্নিতকরণ তথ্যচিত্র |
যে পাঁচটি উত্তেজিত দশা পাওয়া গেছে সেগুলোর নাম দেয়া হয়েছে Ωc(3000)0, Ωc(3050)0, Ωc(3066)0, Ωc(3090)0 and Ωc(3119)0. ব্র্যাকেটে দেয়া সংখ্যা MeV সূচক, যে শক্তিমাত্রায় এদের চিহ্নিত করা গেছে। MeV ব্যবহৃত হয় কোন কণার নিশ্চল অবস্থার ভর বোঝাতে। তো কোনটা ভারী, কোনটা হালকা এ ব্যাপারটাও খুব সহজেই বলে দিতে পারবেন এই গোলমেলে লেখাটা থেকেও। MeV যদিও শক্তির একক, আবার কণা পদার্থবিজ্ঞানে High Energy Physics এ কণাদের ভর হয় relativistic ও কণা-তরঙ্গ দ্বৈততার এ এক চমৎকার হিসেব।
1MeV= 1.602 x 10^-13 জুল। অতএব আলোর বেগের বর্গ দিয়ে ভাগ করলেই চিরপরিভিত কেজি এককে ভর পেয়ে যাবেন। 

:)
বিজ্ঞানীদের পরবর্তী কাজ এদের কোয়ান্টাম নাম্বার বের করা আর অবশ্যই তাত্ত্বিক তাৎপর্য ধরে ফেলা। এর ফলে কোয়ার্ক এবং বহুকোয়ার্ক দশার মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক খোলাসা হবে।
Subscribe to:
Posts (Atom)